,

সদর হাসপাতালে সাপে কাটা যুবককে নিয়ে সিনেমার কাহিনী :: মৃত-জীবিত হওয়া নিয়ে ধুম্রজাল সৃষ্টি :: অবশেষে দাফন

জুয়েল চৌধুরী : হবিগঞ্জ সদর হাসপাতালে সাপে কাটা এক যুবককে নিয়ে রীতিমতো সিনেমার কাহিনী তৈরি হয়েছে। ডাক্তার প্রথমে মৃত ঘোষণা করলেও পরে জীবিত হয়ে উঠে ওই যুবক। আবার সাপুড়ে এসে তাকে নিয়েও যায় ঝাড়ফুঁক দিয়ে তাকে ভালো করে তুলবে। কিন্তু দীর্ঘসময় তন্ত্রমন্ত্র করলেও ওই যুবককে বাঁচাতে পারেনি সাপুড়ে। এ নিয়ে আলোচনা সমালোচনার ঝড় বইছে।
জানা যায়, বানিয়াচং উপজেলার মক্রমপুর ইউনিয়নের দক্ষিণ সাঙ্গর গ্রামের আলী সুন্দরের পুত্র সুমন মিয়া (২০) কে গত সোমবার রাত ১০টার দিকে তার নাম ধরে কে বা কারা ডাক দেয়। সে ঘুম থেকে উঠে দরজা খুললে পায়ের নিচে কামড় অনুভব করে। ব্যথায় সে ছটফট করতে থাকলে পরিবারের লোকজন এসে জিজ্ঞাসা করলে সে জানায় তাকে একটি সাপ কামড়ে দিয়েছে। আত্মীয় স্বজনরা হাত-পা বেধে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে সদর হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। রাত সাড়ে ১২টার দিকে সদর হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। সদর যখন কান্নাকাটি শুরু করেন তার মৃত্যুর খবর শুনে এর ৩০ মিনিট পর সুমন মিয়া হাত-পা নাড়াছাড়া করলে পুনরায় ডাক্তার এসে দেখেন সে জীবিত আছে। সাথে সাথে তাকে অক্সিজেন ও দুইটি ভ্যাকসিন দেয়া হয়। এক পর্যায়ে ইসিজি করেও নিশ্চিত হন চিকিৎসক সুমন জীবিত রয়েছে। এদিকে ঘণ্টাখানেক জীবিত থাকার পর আবার সে অচেতন হয়ে পড়ে। তখন একই ডাক্তার জানান, সে মারা গেছে। আবার ইসিজি করে সুমনের মৃত্যু নিশ্চিত করেন ডাক্তার। তখন হাসপাতালের ভেতরে থাকা প্যারামেডিকের এক ইন্টার্নী দালাল এক সাপুড়ে আনেন। সাপুড়ে এসে ফুঁক দিয়ে বলে সে জীবিত আছে। তাকে নিয়ে ঝাঁড়তে হবে। তখন স্বজনরা তার কথামতো সাপুড়ের বাড়ি নিয়ে যায়। সেখানে নিয়ে দীর্ঘক্ষণ বিভিন্ন গানের মাধ্যমে (ও বিষ দৌড়ে লামরে, কালিয়া নাগেরও বিষ দৌড়ে লামরে) তন্ত্রমন্ত্র করে ঝাড়ফুঁক করে। গতকাল মঙ্গলবার সকালে বলে সুমন বেঁচেছিলো।
কিন্তু সাপের বিষে তার কলিজা ও ফুসফুস ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তাই তাকে বাঁচানো সম্ভব হয়নি। কামড়ানোর সাথে সাথে নিয়ে গেলে হয়তো বাঁচানো যেতো। এরপরও আরেকজন চিকিৎসক পরীক্ষা নিরীক্ষা করে তার মৃত্যু নিশ্চিত করার পর গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যায় সুমনকে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়।


     এই বিভাগের আরো খবর